অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি | Affiliate Marketing করে আয় করার উপায়

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি

Affiliate Marketing করে আয় করার উপায়

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো একটি বিপণন ব্যবস্থা যেখানে অ্যাফিলিয়েটরা তাদের মার্কেটিং এর কারণে প্রতিটি ভিজিট, সাইন-আপ বা বিক্রয়ের জন্য কমিশন পান।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি | Affiliate Marketing করে আয় করার উপায়

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি, এফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে শুরু করবো, এ নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন রয়েছে। অনলাইনে আয় করার সবচেয়ে লাভজনক পদ্ধতিগুলোর মাঝে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অন্যতম। Affiliating marketing এর মাধ্যমে অনেকে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করছেন।

affiliate marketing কি এবং মার্কেটিং এর সঠিক প্রসেস এবং কাজ সম্পর্কে ধারণা না থাকায় অনেকের ইচ্ছা থাকলেও এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারছেন না। আপনাদের জন্যই আমাদের এই আর্টিকেলটি।

আজ আমরা এই Affiliate Marketing Tutorial থেকে আমরা Affiliate Marketing ki এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কিভাবে করতে হয়, অ্যাফিলিয়েট ,মার্কেটিং করে আয় করার উপায় সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পাবো ইন-শা-আল্লাহ। আজকের আলোচনা থেকে আমরা জেনে নিবো;

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি

affiliate marketing শুরু করতে আপনার কী কী দক্ষতা প্রয়োজন?
অ্যাফিলিয়েটিং করে আয় করার জন্য আপনি প্রস্তুত কি না?
এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কোন নিস সিলেক্ট করবেন?
Affiliate প্রোডাক্ট কোথায় পাবেন ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি
  • এফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করবো?
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা যায়?
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কোন বিষয়ে জানা প্রয়োজন?
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নিস

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো কমিশন ভিত্তিক প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রয় করার পদ্ধতি। বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম চালু করে রেখে দেয়। এখানে যে কেউ যোগদান করে কমিশনের ভিত্তিতে পন্য বা সেবার মার্কেটিং করে কমিশন গ্রহণ করতে পারে।

এছাড়াও বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েট মার্কেট প্লেস রয়েছে। যারা মার্কেটিং ভালো করতে পারেন তাদরে জন্য এই মার্কেটপ্লেসগুলো হতে পারে আয় করার প্রধান উৎস।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি তা বিস্তারিত ভাবে বললে আপনি আরো ভালো করে বুঝতে পারবেন।

প্রতিটি কোম্পানি তাদের সার্ভিস বা পন্য বিক্রি করার জন্য নিজদের ব্যবস্থাপনায় বিক্রয় কর্মকর্তা নিয়োগ করে থাকে। তাদেরকে প্রতি মাসে বিক্রয় করার জন্য একটা টার্গেট দেওয়া হয় এবং মাসিক বেতন ভুক্ত কর্মকর্তা বা বিক্রয় কর্মীরা কোম্পানির সেবা বা পন্য বিক্রয় করে থাকে।

আবার কিছু কোম্পানি তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রয় করার জন্য অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম চালু করে রাখে। ফলে যে কেউ এই প্রোগ্রামে যোগ দিয়ে কোম্পানির সার্ভিস বা প্রোডাক্ট বিক্রি করার জন্য কমিশন ভিত্তিক চুক্তিতে আবদ্ধ হতে পারে। অর্থাৎ সহজ ভাষায় যাদেরকে আমরা ডিলার বলে থাকি ।

ডিলার কোম্পানির সার্ভিস বা পন্য যত বেশি বিক্রি করবে তত বেশি কমিশন পাবে। এরুপ অনলাইনে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যারা যুক্ত হয়ে কোন কোম্পানির সার্ভিস বা পন্য বিক্রি করে তারা চুক্তি অনুযায়ী কমিশন পেয়ে থাকে।
আপনার মার্কেটিং অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে অনলাইনে নিজেকে একজন ডিলার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যোগ দিতে পারেন।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন কোম্পানির পন্য বা সেবা বিক্রি করে কমিশন ভিত্তিক আয় করাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলা হয়।
এই মার্কেটিং পদ্ধতিতে কোম্পানি আপনাকে মাসিক বেতন দিবে না। বিক্রয় করলে শুধু কমিশন দিবে। এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে কোম্পানি কিভাবে বুঝবে যে আমি তাদের পন্য বা সেবা বিক্রি করছি?

প্রযুক্তির যুগে এটি এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে। আপনি যখন কোন কোম্পনির অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে জয়েন্ট করবেন তখন তারা আপনাকে একটি স্বতন্ত্র ওয়েবলিংক তৈরি করে দিবে।
এই লিংকের মাধ্যমে আপনাকে বিক্রয় করতে হবে। অর্থাৎ আপনি এই লিংক দিয়ে অনলাইনে মার্কেটিং করে গ্রাহকের কাছে পন্য বা সেবা বিক্রয় করবেন।

আপনার লিংকের মাধ্যমে যত প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রয় হবে সেগুলোর কমিশন আপনি পেয়ে যাবেন। সুতরাং মার্কেটিং এই মডিউলকেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কেন করব

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা সমূহ।
খরচ কমঃ- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর খরচ অনেক কম। এবং এর সকল খরচ বিক্রেতা করে থাকে। আপনার উৎপাদন, মান নিয়ত্রন করতে হবে না।
এড ফি নেইঃ- সাধারণত অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে যুক্ত হতে আপনাকে কোন প্রকার টাকা প্রদান করতে হবে না বা হয় ন।

কাস্টমার সাপোর্ট লাগে নাঃ- আপনি অফলাইনে কোন পন্য বিক্রি করলে কাস্টমারের সকল সুবিধা, অসুবিধা আপনাকে দেখতে হয়। কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ এসব দেখবেন বিক্রেতা।
বিশ্বজুড়ে মার্কেটিংঃ-  অফলাইনে কোন পন্য বিক্রি করার ক্ষেএে আপনি কিছু এলাকার মানুষ এর কাছে সেগুলো বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ  আপনি সারা বিশ্বের কাছে আপনার পন্য সেবা পৌঁছে দিতে পারবেন।

পেসিব ইনকামঃ- অফলাইনে মার্কেটিং  এ আপনি যতক্ষণ কাজ করবেন ততক্ষণ টাকা আয় করতে পারবেন। কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ আপনি যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে ভালো ইনকাম করতে  পারবেন। দিন দিন আপনার ইনকাম বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর আরো সুবিধা রয়েছে। এখানে আপনার কোন কারিগর বা ব্যাবসায়ীক প্রতিস্থান এবং পন্য মজুদ রাখতে হবে না।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে কত টাকা আয় করা যায়

How much money can be made by affiliate marketing
এফিলিয়েট মার্কেটিং বর্তমানে অনলাইন ইনকাম এর একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় মাধ্যম! অনলাইন এ সফলক্যারিয়ার গড়ার লক্ষ্যে এর বিকল্প নেই!আমাদের বাংলাদেশের অনেকেই আজ বড় বড় উদ্যোক্তা হয়েছেন শুধুমাত্রএই এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন Devsteam It এর আলামিনকবির,লাজুক হাসান,প্যাসিভ জার্নাল ইউনিভার্সিটির খালিদ ফারহান ও এস এম এন জামান! যাহোক

মূলকথায় আসা যাক,আমরা অনেকেই মনেকরি যে অনলাইন হয়তো অনেক সহজ একটি জায়গা যেখানে আপনি যখন তখন প্রবেশ করবেন আর সাথেই টাকা উপার্জন শুরু হয়ে যাবে,কিন্ত কিছুদিন পর যখন দেখি যে ইনকাম হচ্ছেনা তখন আপনি হাল ছেড়ে দেন আর আপনার ভিতর তৈরী হয় অনলাইন এর উপর একপ্রকারের বিতৃষ্ণা!

কিন্তু একবার কি আপনি ভেবে দেখেছেন যে টাকা ইনকাম করা কি আসলেই এতটাই সহজ ?আমি বলবো সহজ কিন্ত হ্যা টাকা ইনকাম করতে আপনার লাগবে সঠিক জ্ঞানর্জন করা, সঠিক দিকনির্দেশনা আরঅধ্যাবসায়! যেমন একটি উদাহরণ দেয়া যাক,প্রতিটা মানুষ প্রাথমিক শিক্ষা জীবন থেকে শুরু করে অনার্স/মাস্টার্স  পর্যন্ত পড়াশোনা করেন একটি ভালোমানের চাকরির জন্য যেখানে তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয় চাকরির মতো সোনার হরিণটি ধরার জন্য!

এমনকি সবাই চাকরি পায় ও না! আর অনলাইন এ সফল ক্যারিয়ার গড়ার জন্য আপনাকে কষ্ট করতে হবে মাত্র ৬ মাস থেকে ১ বছর!কিন্তু অনেকেই এই পরিশ্রম সঠিকভাবে দিক নির্দেশনা মেনে করতে পারেনা বলে হারিয়ে যায়! এখানে সফল হতে হলে আপনাকে লেগে থাকার মনমানুষিকতা তৈরী করতে হবে অবশ্যই! 

কারণ অনলাইন এ আছে একটি বিশাল লোভনীয় ক্যারিয়ার যা আপনি কল্পনাও করতে পারছেন না আর সেই বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেয়ার জন্যই আমার এই আর্টিকেলটি! তাহলে আসা যাক মূল আলোচনায় কেমন পরিমান আয় করা যায় এফিলিয়েট মার্কেটিং করে বা যারা এখন এফিলিয়েট মার্কেটিং এ সফল তারা কেমন আয় করে থাকেন আর আয়ের পদ্ধতিগুলা কি কি ?

এফিলিয়েট মার্কেটিং হলো প্যাসিভ ইনকাম সোর্স অর্থাৎ আপনি একটি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির পণ্য প্রমোটের মাধ্যমে যে নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন হিসাবে পেয়ে থাকেন তাকেই এফিলিয়েট মার্কেটিং বলে এবং যারা এই প্রোমোটিং এর কাজ করে থাকেন তাদেরকে এফিলিয়েট মার্কেটার বলে! 

২৫-৪০ গুন্ দামে বিক্রি করতে পারবেন অর্থাৎ আমি যদি ধরি ২৫ গুন্ তাহলে দাঁড়ায়২০০*২৫=$৫০০০ যা বাংলাদেশী টাকায় আসে 8০০০০০ লক্ষ্য টাকা!আর এজন্যই একটি ওয়েবসাইট কে একটি জমির সাথে তুলনা করা হয়ে থাকে! কাজেই আপনি বুঝতেই পারছেন কি পরিমানে ইনকাম কর সম্ভব এই এফিলিয়েট মার্কেটিং করে!

কাজেই আর দেরি না করে আজই পা বাড়ান আপনার এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সফলতার লক্ষে আর আপনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমিতো আছি আপনার সাথেই! আপনার ওয়েবসাইট তৈরী করার দায়িত্ব আপনি ছেড়ে দিতে পারেন Namecheap Company   এর উপর যারা একটি সাইট তৈরী করতে নিম্নোক্ত জিনিসগুলো প্রয়োজন –

১. একটি ডোমেইন (৮০০ টাকা থেকে শুরু)

২. একটি হোস্টিং প্যাক (সরাসরি আমেরিকান হোস্টিং ১৩০০ টাকা থেকে শুরু)

৩. একটি SSL সার্টিফিকেট (১৫০ টাকা থেকে শুরু)

৪. একটি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ফ্রি)

৫. একটি থিম (ফ্রি অথবা প্রিমিয়াম আপনার পছন্দ অনুযায়ী কিনতে পারেন) ও

৬. কিছু প্লাগিনস (ফ্রি প্লাগিন্সই যথেষ্ট আপনি নিজেই করে নিতে পারেন)

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য কোন বিষয়ে জানা প্রয়োজন?

বর্তমান সময়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing) অনলাইনে উপার্জনের ক্ষেত্রে খুবই শক্তিশালী একটি সেক্টর। এজন্য আমরা অনেকেই এখন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে জানার জন্য বিশেষভাবে আগ্রহী। আজ আমরা এই আর্টিকেলটিতে জানবো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মৌলিক কিছু বিষয়বস্তু সম্পর্কে যা পরবর্তীতে আমাদের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কাজের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সহায়ক হবে।

অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম নিয়ে গবেষণা করুন

অনলাইনে অনেক ধরনের অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কে কাজ করা সম্ভব। তবে কাজ শুরুর পূর্বে কিছু বিষয় অবশ্যই জানা প্রয়োজন। যেমন প্রথম অবস্থাতে সহজেই কোন নেটওয়ার্কে কাজ পাওয়া সম্ভব, কোন ধরনের প্রোডাক্টের বিবরণী আপনি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন, কি ধরনের প্রোডাক্টের কমিশন বেশি, কোন ধরনের প্রোডাক্ট বেশি সেল হয়, বাংলাদেশ থেকে সেই অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে কাজ করার জন্য অ্যাকাউন্ট করা যায় কি না, কতদিন পর পর পেমেন্ট তোলা সম্ভব, বাংলাদেশ থেকে পেমেন্ট তোলা সম্ভব কি না ইত্যাদি বিষয়বস্তু সম্পর্কে ভালো ভাবে রিসার্চ করুন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং অনলাইনে উপার্জনের ক্ষেত্রে খুবই নির্ভরযোগ্য একটি মাধ্যম। আপনার যদি এই বিষয়ে আগ্রহ থাকে এবং আপনি যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ইন্টারনেট থেকে উপার্জন করতে ইচ্ছুক হন তাহলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নিয়ে বেশি বেশি রিসার্চ করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান লাভের চেষ্টা করুন। আপনি যদি ধৈর্য সহকারে লেগে থাকতে পারেন তাহলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সাহায্যে খুবই হ্যান্ডসাম একটি ক্যারিয়ার নিশ্চিত করতে সক্ষম হবেন।

এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কত প্রকার

এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বিভিন্ন ধরণের হতে পারে৷ বিভিন্ন ই-কমার্স ওয়েবসাইটে এ্যাফিলিয়েট অপশন থাকার পাশাপাশি নিজের কাছে থাকা ইউটিউব চ্যানেল, ফেইসবুক পেইজ বা গ্রুপ, টেলিগ্রাম গ্রুপ, ইনস্টাগ্রাম পেইজ ইত্যাদি ব্যবহার করে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। এক্ষেত্রে আপনাকে অ্যামাজন, স্যানাপডিল ইত্যাদি এ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কের লিংক কালেক্ট করতে হবে। চলুন জেনে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কতভাবে ইনকাম জেনারেট করা যায়ঃ-

১। ফেইসবুক মার্কেটিং

আমরা বর্তমানে ফেইসবুকের মাধ্যমে সবার সাথে কমিউনিকেশন করে থাকি। এই মাধ্যমকে কাজে লাগিয়েও এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। এক্ষেত্রে ফেইসবুকে থাকা বিভিন্ন ফ্রেন্ড, গ্রুপ মেম্বার, পেইজ মেম্বার সকলের সাথে আপনার রেফারেল লিংকটি শেয়ার করতে পারলে সেল জেনারেট হতে খুব একটা অসুবিধা হবে বলে আমি মনে করি না। তবে এই মার্কেটিংয়ের জন্য আপনার ফ্রেন্ডদের সংখ্যা বেশি হতে হবে।

২। সিপিএ মার্কেটিং

এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর এই শাখাটি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মোটামুটি সহজেই সেল পাওয়া যায় বলে অনেকেই এই সেক্টরের দিকে ঝুঁকছে। কেননা এই সেক্টরে ক্লিক করা মাত্র আপনি একটা কমিশন পাবেন। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, মোটামুটি এই সেক্টরটি নতুনদের ইনকাম জেনারেট করার জন্য তুলনামূলক সহজই বলা চলে। তবে এই সেক্টরে সৎ থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৩। ইমেইল মার্কেটিং

এই ধরণের এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের কাজ হলো বিভিন্ন দেশের ই-মেইল সংগ্রহ করে তা কোম্পানির সেলিংয়ের কাজে লাগানো। উদ্দেশ্য কোম্পানির বিভিন্ন আপডেট, অ্যাড ইত্যাদি ই-মেইলের মাধ্যমে প্রচার করা। আজকাল বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সার সাইটে ই-মেইল সংগ্রহের কাজের বেশ প্রচলন শুরু হয়েছে। আপনিও চাইলে কাজটি করে স্বাবলম্বী হতে পারেন সহজেই।

৪। ইউটিউব মার্কেটিং

বিভিন্ন পণ্যের ভিডিও রিভিউ করে আপনি ইউটিউবকে কাজে লাগিয়ে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং টেকনিক ব্যবহার করে কোম্পানি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল করে দিতে পারেন। কোম্পানির পন্য বা সার্ভিস প্রচার করে প্রতি মাসে ভালো একটা টাকা আয় করা সম্ভব। কারণ বর্তমানে বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষ দিনের বেশ বড়সড় অংশ কাটিয়ে ফেলছে এই ইউটিউবের পেছনে। এতো বড় অংশের সামনে যখন মোটামুটি বেশকিছু সময় ধরে আপনার পণ্যের এড প্রচারিত হতে তখন তারা তা কিনতে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করবে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং নিস কি

বিশ্বাস করুন, নিশ নির্বাচন করা কোন রকেট সাইন্স নয়। সুতরাং নিশ বাছায়ের ক্ষেত্রে অত্যাধিক চিন্তা না করাই শ্রেয়।
যদিও লিখাটা একটু বড় হবে তবুও চেষ্টা করেছি গ্লোবালি যেভাবে নিশ নিয়ে কাজ করা হয় সেটার উপর কিছুটা ধারণা দেওয়ার। আমি এ নিয়ে নিজের প্র্যাক্টিক্যাল অভিজ্ঞতার পাশাপাশি যারা এই সেক্টরে অনেক ভাল অবস্থায় আছেন তাদের আইডিয়াও নিয়েছি। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করি।

অনলাইন জগত হলো এমন একটি ঘনবসতিপূর্ণ সেক্টর যেখানে ১০ বছর আগেও একজন এফিলিয়েট মার্কেটার একই সাইটে কুকুরের খাবার, বাচ্চার ডায়াপার, রান্নাঘরের আসবাবপত্র, বাইসাইকেল ইত্যাদি নিয়ে কথা বার্তা বলতো। কিন্তু এখন যদি একজন নতুন মার্কেটার একই কাজটি ২০২০ সালে এসে করে তাহলে তাকে অনেক মাশুল গুনতে হবে। ব্যপারটি খুলে বলি। যদিও এখনও এমন কিছু সাইট আছে যারা এই কাজটি এখনও করছে এবং যাদেরকে বলা হয় “অথোরিটি বা মাল্টি নিশ সাইট”অনার। 

কিন্তু আপনি একটু গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, এই কাজগুলো যারা করে থাকেন তাদের রয়েছে নিজেদের নিজস্ব টিম সেটাপ, আর্থিক স্বচ্ছলতা এবং বিভিন্ন দক্ষতায় উত্তীর্ণ ব্যক্তি-বর্গদ্বয়। আর আপনি যদি একক অথবা ছোট পরিসরে ব্যক্তি বা টিম মেম্বার হয়ে থাকেন তাহলে তাদের জন্য একটু হিসেব করে এই জগতে পদচারণা করতে হবে। আর আমি মনে করি এরকম একক ব্যক্তির সংখ্যাই বেশী।

এই ২০২০ সাল অথবা আগত দিনগুলোতে একজন সফল এফিলিয়েট মার্কেটার হওয়ার প্রথম ধাপ হলো একটি সঠিক নিশ/টপিক পছন্দ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। কে কোন নিশ নিয়ে কাজ করছে একজন সফল মার্কেটার এটার উপর গুরুত্ব না দিয়ে তার নিজের পছন্দের নিশকে যত বেশী নির্দিষ্ট (specific) করতে পারবে সে তত সফলকাম হবে।

এখন আসি, নিশ জিনিষটা আসলে কি?
আমরা নিচে বিস্তারিত যাওয়ার পূর্বে, নিশ বলতে আসলে কি বুঝায় প্রথমে সেটা বুঝার চেষ্টা করি।
এক কথায় নিশ এর অর্থ করা বড়ই মুশকিল। কারণ এই শব্দের অর্থ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে। যেহেতু এখন আমরা একজন এফিলিয়েট মার্কেটার হিসাবে নিশ বুঝার চেষ্টা করছি সেক্ষেত্রে যেটা দাঁড়ায় “একটি বৃহত্তর ক্যাটাগরী বা ইন্ড্রাষ্ট্রির মধ্যে ছোট থেকে ছোট একটি নির্দিষ্ট শিল্প বা টপিক যেটা নিয়ে বিস্তরভাবে কথা বার্তা বলা যায় সেটাকেই নিশ বলে। ব্যাপারটা একটু জটিল মনে হচ্ছে, তাই না? তাহলে নিচের উদাহরণটা দেখলে আশা করছি আর জটিল মনে হবে না।

Industry: Pet
Niche: Dog Care
Sub niche: Dog Care > Dog Training
Sub-Sub-niche: Dog Care > Dog Training > Pit-bull Training

বৃহত্তর ক্যাটাগরী/শিল্প : পোষ্য প্রাণী (বিড়াল, কুকুর, পাখি ইত্যাদি)
ছোট নিশ/টপিক: কুকুরের যত্ন (নির্দিষ্ট নিশ)
ছোট থেকে ছোট সাব-নিশ: কুকুরের যত্ন , কুকুরের প্রশিক্ষণ
সাব-সাব-নিশ: কুকুরের যত্ন, কুকুরের প্রশিক্ষণ, পিট বল প্রশিক্ষণ

এভাবে প্রতিটি নিশের রয়েছে সাব নিশ আবার তার মধ্যে রয়েছে সাব-সাব-নিশ। আপনি যখন পুরোপুরি দক্ষ হবেন তাহলে সহজেই প্রতিটি নিশের ভিতরে প্রবেশ করতে পারবেন। আর যত ভিতরে প্রবেশ করতে পারবেন তত আপনি সফলতা পাবেন এবং বাজারে নিজের স্থান তৈরী করে নিতে পারবেন।
আমি যদি সামনের দিকে নিশ নিয়ে আরেকটু কথা বার্তা বলি তাহলে ব্যাপারটা ক্লিয়ার হবে বলে মনে করছি।

উদাহরণ স্বরূপ: আমরা অনেকেই মনে করতে পারি ওজন কমানো (weight loss) একটি নিশ। আসলে ব্যাপারটি কি তাই? উত্তর না। এটি একটি বহু মিলিয়ন ডলার মার্কেট এর নিশ। যার মধ্যে রয়েছে আবার অনেক সাব নিশ। যেমন আমরা বলতে পারি গর্ভাবস্থার পরে ওজন কমানো (post-pregnancy weight loss) অথবা হৃদরোগীদের জন্য ওজন কমানো (weight loss for heart patients)।

আপনি এখন কিছুটা আমার কথা বুঝতে পারছেন? এই ওজন কমানো নিশের ব্যাপারে বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে কথা বলা যেতে পারে এবং প্রতিটি এঙ্গেল এক একটি সাব-নিশ হতে পারে। তবে আপনার পছন্দের নিশকে প্রথম দিকে এত বড় বানাতে যাবেন না যা পরবর্তীতে আপনার ব্যবসা বাড়ানো বা প্রসারিত করার মত কোন অর্থ বা সময় নেই। 

অনেকেই যেমনটি করে থাকেন – ঢাকা সিটিতে অপারেশনের পরে প্রথমবারের মায়েদের জন্য গর্ভধারণের পরে ওজন কমানো (post-pregnancy weight loss for first-time mothers in Dhaka City after a cesarean) শিরোনামে লম্বা কনটেন্ট সাইটে পাবলিশ করেন। ফলে তেমন ভাল রেসপন্স পান না। এজন্য আপনাকে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা করে নিশ বাছাই করতে হবে। আপনি শুরু করুন ছোট নিশ থেকে কিন্তু চিন্তা রাখতে ভবিষ্যতে উক্ত নিশ নিয়ে যেন আপনি চাইলে আপনার সাইটটিকে বড় করে ফেলতে পারেন।

নিশ কত প্রকার

প্রধানত প্রতিটি নিশকে দুই ভাগে ভাগ করতে পারি।
১) সিঙ্গেল নিশ বা একক নিশ। এর মানে হলো পুরা সাইটে যেকোন একটি বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলা। যেমন: https://laptopsgeek.com/
২) মাল্টি নিশ বা অথোরিটি নিশ। যেখানে একই সাইটে একের অধিক বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলা। যেমন: https://www.nytimes.com/wirecutter/

নিশ সিলেকশন মেথড/প্রক্রিয়া:
মোটা দাগে বলতে গেলে নিশ সিলেকশনের জন্য আমরা দুইটি মেথড অবলম্বন করি। প্রথমটি হলো ফ্রি মেথড। এই মেথড এর মাধ্যমে বিভিন্ন ফ্রি টুলস্ ব্যবহার করে আমরা একটি প্রফিটেবল নিশ বের করতে পারি। তবে এটি সাধারণত সময় সাপেক্ষ্য ব্যাপার।
দ্বিতীয়টি হলো পেইড মেথড। এই মেথডে বিভিন্ন পেইড টুলস ব্যবহার করে অতি অল্প সময়ে একটি প্রফিটেবল নিশ বের করা যায়। যাদের অর্থ-কড়ি আছে এবং সময় কম তারা এটি ব্যবহার করতে পারেন।